পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করার উপায় 2023

পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করার উপায় : আপনি যদি একজন শিক্ষার্থী হয়ে থাকেন তাহলে আপনার মাথায় সব সময় ঘুরপাক খাবে কিভাবে পরিক্ষায় ভালো ফলাফল করা যায়।

প্রত্যেকটি পরিক্ষায় আগে আমরা ঠিক করি এবার আগের চেয়ে ভালো রেজাল্ট করবো। নিজের সময়কে সঠিক ভাবে কাজে লাগাবো।

কিন্তু সঠিক টেকনিক না থাকার কারণে আমরা সব কিছু তালগোল পাকিয়ে ফেলি। যদি পরীক্ষায় ভালো করার জন্য সারাদিন পড়ার টেবিলে বই নিয়ে বসে থাকি।

কিন্ত সারাদিন দিন পড়ার টেবিলে বই নিয়ে বসে থাকার পরেও পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করতে না পারায় হতাশ হয়ে যায়।

যদিও পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করার দোয়া আমার জানা নেই। যেটা পড়লে না পড়েও ভালো রেজাল্ট করা সম্ভব।

আসলে পরীক্ষায় ভালো করার জন্য আপনাকে সঠিক নির্দেশনা অনুযায়ী পড়াশোনা করতে হবে। মনে রাখবেন, কখনো কখনো সারাদিন রাত জেগে পড়াশোনা করলে ও ভালো রেজাল্ট করা সম্ভব হয় না।

কিভাবে ssc তে a+ পাওয়া যায়

সব শিক্ষার্থীর মধ্যে পরীক্ষা নিয়ে অবশ্যই দুশ্চিন্তা অবশ্যই থাকবে কিন্তু এই চিন্তা নিয়ে বসে থাকলে চলবে না।

পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করার জন্য বেশি বেশি পড়াশোনার বিকল্প নেই ঠিকই কিন্ত আপনাকে অবশ্যই সঠিক পরিকল্পনা মাফিক পড়াশোনা করতে হবে।

আপনাকে আগে থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে এবং নিয়মিত পড়াশোনা করতে হবে। তাছাড়া শুধু লেখাপড়া করলে হবে না অবশ্যই কিছু টেকনিক কাজে লাগাতে হবে।

তাহলে চলুন নিচে থেকে জেনে আসি কিভাবে পড়াশোনা করলে পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট বা পরীক্ষায় ভালো করার উপায়

পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করার উপায়

অনেক শিক্ষার্থী আছে যারা পরিক্ষার সময় খাওয়া, ঘুম ছাড়া পড়ার টেবিল থেকে উঠে না। কিন্তু, এতো পরিশ্রম করে যদি পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট না হয় তখন হতাশ হয়ে পড়ে।

এথানে আপনাকে শুধু পড়াশোনা করলে হবে না। পরীক্ষায় খাতায় ভালো লেখার অভ্যাস করতে হবে। তাই বাড়িতে প্রচুর সময় নিয়ে পড়াশোনা করার পাশাপাশি খাতায় লেখার অভ্যাস করুন।

(১) নিয়মিত রুটিন অনুযায়ী পড়াশোনা করা

পরীক্ষায় ভালো করার জন্য নিয়মিত রুটিন তৈরি করে সেই অনুযায়ী পড়াশোনা করতে হবে। অগোছালো পড়াশোনা করতে কখনো পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করা যায় না।

অগোছালো পড়াশোনার ফলে পরীক্ষায় রেজাল্ট দেখে হতাশ হয়ে যাবেন। তাই প্রত্যেক দিনের পড়া প্রত্যেক দিন করতে হবে। আপনি দৈনিক, সপ্তাহ এবং মাসিক একটা পড়ার রুটিন তৈরি করতে পারেন।

এতে আপনার প্রতিদিনের পড়া প্রতিদিন হয়ে যাবে। পরিক্ষার সময় আপনাকে বাড়তি পড়ার চাপ মাথায় নিতে হবে না।

তাছাড়া, নিয়মিত রুটিন মাফিক পড়াশোনা করার অভ্যাস করে নিলে পড়ার প্রতি মনোযোগ সৃষ্টি হবে। রাতে-দিনে ৬-৭ ঘন্টা পড়াশোনা করলেও বোরিং লাগবে না।

(২) বিষয় ভিত্তিক সময় নির্ধারণ করা

রুটিনের মধ্যে আপনাকে নির্ধারণ করতে হবে প্রতিটি সাবজেক্ট কত সময় ধরে পড়বেন। মনে করুন আপনি ইংরেজিতে দুর্বল।

এখন আপনি যদি সারাদিন ইংরেজি নিয়ে পড়ে থাকেন তাহলে অন্যান্য সাবজেক্ট গুলোতে খারাপ রেজাল্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই প্রতিটি সাবজেক্ট পড়ার জন্য নিদিষ্ট সময় নির্ধারণ করে নেওয়া ভালো।

(৩) গ্রুপ তৈরি করে পড়াশোনা করা

আপনি যখন কোনো বিষয় পড়াশোনা করবেন তখন সেই সম্পর্কে আপনার মধ্যে একটা ধারণা তৈরি হবে। আবার একই বিষয় যখন আপনার অন্য বন্ধুরা পড়বে তখন তাদের মধ্যে ও এক একটা ধারণা তৈরি হবে।

এবার আপনি বন্ধুদের সাথে যখন গ্রুপ তৈরি করে পড়াশোনা করবেন তখন একে অন্যের সাথে ধারণা গুলো আদান প্রদান করতে পারবেন।

তাছাড়া পড়াশোনার বিষয় নিজেরা আলোচনা করার মাধ্যমে আরো বেশি জানতে বা শিখতে পারবেন এবং নিজেদের মধ্যে সমস্যা গুলো সমাধান করতে পারবেন।

(৪) পড়ার পাশাপাশি লেখার অভ্যাস করুন

পড়ার পাশাপাশি আপনাকে অবশ্যই লেখার অভ্যাস করতে হবে। আপনি কোনো বিষয় পড়ার পরে যদি খাতায় লিখেন তাহলে অনেক দিন পর্যন্ত মনে থাকে।

তাছাড়া আপনার হাতের লেখা সুন্দর হবে এবং অনেক দ্রুত লেখার অভ্যাস তৈরি হবে। পড়ার পরে লেখার মাধ্যমে আপনার ভুল গুলো সহজে ধরতে পারবেন এবং পরে সেটা সংশোধন করে নিতে পারবেন।

এমন অনেকে আছেন যারা পড়া বলতে পারে কিন্তু পরিক্ষার খাতায় লিখতে পারে না। যাদের মধ্যে এই সমস্যা রয়েছে তারা কখনো ভালো রেজাল্ট করতে পারে না।

তাই আপনাকে অবশ্যই পড়ার পাশাপাশি খাতায়  লেখার অভ্যাস করতে হবে।

(৫) নিয়মিত ক্লাস করা

একজন ভালো ছাত্রের গুণাবলীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো নিয়মিত ক্লাসে হাজির হওয়া। ক্লাসে শিক্ষকের লেকচার মনোযোগ দিয়ে শোনা।

ক্লাসে যখন আপনি পাঠ্য বইয়ের লেকচার গুলো মনোযোগ দিয়ে শুনবেন তখন সহজে বুঝতে পারবেন এবং বাড়ির হোমওয়ার্ক সহজ হবে।

তাছাড়া ক্লাসে শিক্ষকদের পাঠ্য বইয়ের গুরুত্বপূর্ণ লেকচার গুলো নোট করে রাখবেন।

(৬) নোট তৈরি করা

পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করার জন্য নোট তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ। ক্লাসে বা ইন্টারনেট থেকে সহজে নোট তৈরি করতে পারবেন।

পরিক্ষার সময় এই নোট গুলো পড়ে সহজে রিভিশন দিতে পারবেন। নোট তৈরির মাধ্যমে আপনার পড়া অনেকটা সহজ হয়ে যাবে। সব সময় চেষ্টা করবেন লিখিত নোট তৈরি করার জন্য।

(৭) বিগত পরিক্ষার প্রশ্ন বিশ্লেষণ করা

আপনি বিগত পরিক্ষার প্রশ্ন গুলো বিশ্লেষণ করবেন। এতে সামনের পরিক্ষার প্রশ্ন সম্পর্কে ভালো ধারণা পাবেন।

প্রশ্ন বিশ্লেষণ করার মাধ্যমে পরীক্ষায় কি ধরনের প্রশ্ন আসতে পারে সেই ধরনের প্রশ্ন গুলো পড়তে পারবেন। পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করার সেরা একটি উপায় এটা।

(৮) পর্যাপ্ত ঘুম পড়া

একজন মানুষকে সুষ্ঠ থাকার জন্য ঘুম অপরিহার্য। আপনার যদি ভালো ঘুম না হয় আপনি ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পড়বেন।

ঘুম মানুষের মস্তিষ্ক সুষ্ঠ ও স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। তাই প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য ৭-৮ ঘন্ট ঘুম পড়া বাধ্যতামূলক।

আপনার মধ্যে যদি ঘুমের ঘাটতি থাকে তাহলে পড়াশোনা সহ অন্যান্য কাজে মন বসবে না। তাছাড়া ঘুম না হওয়ার কারণে পড়া মনে রাখতে পারবেন না।

(৯) ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়া

কোনো বিষয় ভুল করার পরে সেই ভুল থেকে যদি আপনি শিক্ষা নিতে পারেন তাহলে সেই শিক্ষা সারাজীবন মনে থাকে।

তাই আপনাকে নজর দিতে হবে বিগত পরিক্ষাতে কি কি ভুলের জন্য আপনার রেজাল্ট খারাপ হয়েছে। সেই ভুল গুলো বের করে সমাধান করার পাশাপাশি শিক্ষা গ্রহন করতে হবে।

(১০) পড়ার পরিবেশ তৈরি করা

পড়ার জন্য আপনাকে সুন্দর মনোরম নির্জন একটি পরিবেশ তৈরি করতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় আপনি পড়ছেন, আর আপনার পাশে কেউ গল্প করছে।

এতে কিন্তু আপনি পড়ায় মনোযোগ সৃষ্টি করতে পারবেন না। পড়ার জন্য নির্জন পরিবেশ অনেক ভালো। তাছাড়া, আপনার পড়ার টেবিল সুন্দর করে গুছিয়ে রাখবেন।

পরিস্কার ও গোছানো ঘরে লেখাপড়া করতে সবার মন বসে। তাই চেষ্টা করবেন সব সময় নিজের পড়ার টেবিল এবং ঘর সুন্দর করে গুছিয়ে রাখতে।

(১১) পরিক্ষার খাতায় লেখার কৌশল

পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করার উপায় গুলোর মধ্যে সেরা উপায় হলো পরিক্ষার খাতায় লেখার সময় কিছু কৌশল অবলম্বন করা।

পরিক্ষার খাতায় সুন্দর করে গুছিয়ে লিখতে পারলে অবশ্যই শিক্ষকের আকর্ষণ বৃদ্ধি পাবে। প্রশ্নের উত্তর সব সময় ছোট ছোট প্যারা করে লেখার চেষ্টা করবেন।

Hsc তে ভাল রেজাল্ট করার উপায়

যে প্রশ্ন গুলো আপনার কমন পড়বে সেই প্রশ্নের উত্তর প্রথমে লেখার চেষ্টা করবেন। খাতায় অবশ্যই মার্জিন দিবেন এবং কাটাকাটি না করার চেষ্টা করবেন।

যদি সম্ভব হয় সব গুলো প্রশ্নের উত্তর লেখার চেষ্টা করবেন। প্রতিটি প্রশ্ন লেখার জন্য আগে থেকে টাইম নির্ধারণ করে নিবেন। না হলে সব প্রশ্নের উত্তর নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে লিখতে পারবেন না।

(১২) নিজের উপর বিশ্বাস রাখুন

ভালো রেজাল্ট করার জন্য মন দিয়ে পড়াশোনা করতে হবে এবং নিজের উপর বিশ্বাস রাখতে হবে, যে আপনি অবশ্যই পারবেন।

মনে করুন, আপনি অংকে দুর্বল, এখন অংক দেখলে ভয় পেলে চলবে না। বার বার মন দিয়ে চেষ্টা করতে হবে। আর পরিক্ষার সময় নার্ভাস হলে   চলবে না।

আপনি অবশ্যই পারবেন এমন বিশ্বাস এবং আস্থা নিজের উপর তৈরি করতে হবে। নিজের উপর বিশ্বাস রাখলে যেকোনো কাজ অনেক সহজ হয়ে যায়।

(১৩) পড়ার মাঝে ছোট ছোট বিরতি নেওয়া

এমন সাবজেক্ট রয়েছে যেটা দীর্ঘ সময় পড়তে ভালো লাগে না। তারপরও জানার জন্য বা শেখার জন্য পড়তে হয়। কিন্ত, আপনি যতই চেষ্টা করেন দীর্ঘ সময় পড়ার ফলে আপনার মাঝে ক্লান্তি চলে আসবে।

তাই পড়ার মাঝে একটু বিরতি নিতে হবে। ৫-১০ মিনিটের ছোট বিরতি নিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বা অন্য কারও সঙ্গে কথা বলে বা একটু হাঁটাচলা করে আবার পড়তে বসবেন।

তবে, মাথায় রাখবেন ৫-১০ মিনিটের বিরতি যেন ঘন্টার পর ঘন্টা রূপ না নেয়। দীর্ঘ সময় পড়ার মাঝে একটু বিরতি নিলে ব্রেন ও চাপমুক্ত থাকে।

(১৪) নামাজ পড়া

আপনি যদি একজন মুসলিম হন তাহলে আপনাকে প্রত্যেক দিন ৫ ওক্ত নামাজ জামাতে আদায় করতে হবে। আপনি যখন প্রত্যেক দিন নামাজ আদায় করবেন তখন আপনার মন মানসিকতা ভালো থাকবে।

আপনি যে ধর্মের মানুষ হন না কেন অবশ্যই সৃষ্টিকতার উপর বিশ্বাস রাখতে হবে এবং তার কাছে সাহায্য কামনা করতে হবে।

(১৫) শিক্ষকদের কাছে সাহায্য চাওয়া

ক্লাসে শিক্ষক যখন কোনো বিষয় পাঠদান করে তখন আপনি যদি বুঝতে না পারেন তাহলে অবশ্যই শিক্ষকের কাছে প্রশ্ন করবেন।

আমাদের মধ্যে অনেকে আছেন যারা ক্লাসে না বুঝলেও শিক্ষকের কাছে প্রশ্ন করে না। তারা মনে করে বাসায় গিয়ে নিজে নিজে বুঝে নিবো বা সহপাঠীদের সাহায্য নিবো।

এমন ভুল কখনো করবেন না। শিক্ষক আপনাকে যেভাবে বুঝাবে কখনো আপনার সহপাঠী সেই ভাবে বুঝাতে পারবে না।

(১৬) তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করুন

বর্তমান সময়ের পড়াশোনা শুধু বইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। আপনার যদি কোনো বিষয় বুঝতে সমস্যা হয় তাহলে ইন্টারনেট থেকে সমস্যা সমাধান করতে পারবেন।

গুগল, ইউটিউব সহ অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনে আপনার সমস্যার বিষয় সার্চ করুন সমাধান পেয়ে যাবেন। ইন্টারনেটে এমন অনেক ব্লগ ও ভিডিও টিউটোরিয়াল রয়েছে পড়াশোনার বিষয়।

বর্তমানে ইন্টারনেটে অনেক ওয়েবসাইট আছে যেখানে আর্টিকেলের মাধ্যমে পড়াশোনা শিখানো হয়। বিভিন্ন ধরনের বইয়ের পিডিএফ ফাইল পাওয়া যায়।

আবার ইউটিউবে ক্লাস নেওয়া হয়। তবে, খেয়াল রাখবেন আপনি যেন ইন্টারনেট জগতে ডুবে না যান।

আপনি যদি ভালো স্টুডেন্ট হওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে চান বা ভালো স্টুডেন্ট হতে চান তাহলে উপরের আইডিয়া গুলো ফলো করুন।

শেষ কথা

আজকে আলোচনার আমরা জানলাম পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করার উপায় সম্পর্কে। আপনি যদি উপরের আইডিয়া অনুযায়ী পড়াশোনা করেন তাহলে অবশ্যই পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।

পড়াশোনা করার সঠিক সময় আপনাকে মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে এবং যতটুকু সম্ভব মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

Leave a Comment

Share via
Copy link
Powered by Social Snap