Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the rank-math domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/sobazkiq/sobaishikhi.com/wp-includes/functions.php on line 6114
গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায় - সবাই শিখি | Sobai Shikhi

গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায়

গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায়: বর্তমানে অধিকাংশ মানুষরা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগছেন। এই সমস্যার জন্য প্রধান দায়ী হলো তৈলাক্ত ও বেশি পরিমানে খাবার খাওয়া।

এই সমস্যা থেকে বাঁচতে আপনি যদি শুরুতে সচেতন না হন তাহলে ধীরে ধীরে গ্যাস্ট্রিক থেকে আলসারে রূপান্তর হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া জন্য অনেকে দিনের পর দিন ঔষধ খেয়ে যাচ্ছে।

কিন্ত, তারা সাময়িক ভাবে মুক্তি পেলেও গ্যাস্ট্রিক আমাদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। আপনি কি জানেন নিয়মিত এমন কিছু সাধারণ খাবার খেলে খুব সহজে গ্যাস্ট্রিক চিরতরে দূর করতে সাহায্য করবে।

আজকের আর্টিকেলে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো কিভাবে ঘরোয়া উপায় গুলো ব্যবহার গ্যাস্ট্রিক সমস্যা দূর করবেন।

গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায় | পেটের গ্যাস কমানোর উপায়

আমাদের অধিকাংশ মানুষের ঘরে সাধারন এমন কিছু গ্যাস্ট্রিক দূর করার খাবার রয়েছে, যেগুলো খেলে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা চিরতরে দূর হয়ে যাবে।

তাই আপনি যদি গ্যাস দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান, তাহলে আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

(১) প্রচুর পানি পান করা

আমরা সবাই পানি পানের সফলতার কথা জানি। আপনি যদি প্রত্যেক দিন সকালে উঠে খালি পেটে দুই গ্লাস পানি পান করেন তাহলে সারাদিন আপনাকে গ্যাস্ট্রিকের যন্ত্রণা সহ্য করা লাগবে না।

কারণ, পানি আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে এবং আপনার পরিপাকতন্ত্র পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করবে। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক নারীর প্রত্যেক দিন ২.৭ লিটার পানি পান করা উচিত এবং প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষের জন্য প্রত্যেক দিন ৩.৭ লিটার পানি পান করা উচিত।

(২) আদার রস

এসিডিটি দূর করতে আদার রস খুবই কার্যকরী একটি অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান সমূহ খাবার।পেটে গ্যাস হলে ও পেট ফাঁপা হলে আদা রস করে হালকা পরিমানে লবন দিয়ে খেলে দ্রুত সময়ে এসিডিটি বা গ্যাসের সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।

(৩) রসুন

চিরতরে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা হ্রাস করার জন্য রসুনের কোনো বিকল্প নেই বললে চলে। তাই আপনি যদি এক কোয়া রসুন খান তাহলে স্টমাকে অ্যাসিড ক্ষরণের মাত্রা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

এর ফলে ধীরে ধীরে গ্যাস্ট্রিক সংক্রান্ত উপসর্গ গুলো কমতে আরম্ভ করবে।

(৪) আনারস

আনারসে ৮৫ শতাংশ পানি থাকে এবং ব্রোমেলিন নামক হজম সাহায্যকারী প্রাকৃতিক এনজাইম যা গুরুত্বপূর্ণ একটি পাচক রস। এই পাচক রস পরিপাকতন্ত্র পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।

(৫) পুদিনা পাতার রস

গরম পানিতে পুদিনা পাতা ফুটিয়ে খেলে বমি বমি ভাব, পেট ফাঁপা দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও এই পাতার আরে অনেক গুণ রয়েছে।

(৬) ডাবের পানি 

ডাবের পানি গ্যাস্ট্রিক দূর করতে অনেকটা সাহায্য করে। কারণ, এতে থাকে ফাইবার, যা আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করার পাশাপাশি এসিডিটি কমায়।

এছাড়া ডাবের পানি পেটে ব্যাথা ও বুক জ্বালা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

(৭) কলা

কলার মধ্যে প্রচুর পরিমানে পটাশিয়াম থাকে, যা আমাদের শরীরের সোডিয়াম এবং পটাশিয়ামের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।

তাছাড়া, কলা শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের করে দেয় এবং আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।

(৮) হলুদ

হলুদ হজম সংক্রান্ত সকল ধরনের সমস্যা সমাধানে অনেক কার্যকরী ভুমিকা পালন করে। হলুদ এতোটা কার্যকরী যে চর্বিজাতীয় খাবার গুলোও সহজে হজম করতে সাহায্য করে।

(৯) দই

দইতে প্রচুর পরিমানে নানা ধরনের উপকারী ব্যাকটেরিয়া থাকে। এই উপকারী ব্যাকটেরিয়া গুলো দ্রুত হজম করতে সাহায্য করে এবং শরীরের খারাপ ব্যাকটেরিয়া গুলো ধংস করে।

তাই বলা যায় দই খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং গ্যাস্ট্রিক কম হয়। এক্ষেত্রে খাবারের পরে দই খাওয়া বেশ কার্যকরী উপায়। তাই আমি পরামর্শ দিবো প্রত্যেক দিন খাওয়ার পরে ১-২ চামচ দই খান।

(১০) শসা

শসায় ফ্লেভানয়েড ও অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান রয়েছে। এক্ষেত্রে শসা পেটের গ্যাসের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। তাছাড়া, শসা পেট ঠান্ডা করতে অনেক বেশি কার্যকরী।

(১১) পেঁপে 

আপনারা যদি নিয়মিত পেঁপে খান তাহলে গ্যাসের সমস্যা দিন দিন কমতে থাকবে। কারণ, পেঁপেতে রয়েছে পেপেইন নামক এনজাইম যা হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।

(১২) আলুর রস

গ্যাসের সমস্যা রোধ করতে কার্ডকরী উপায় হলো আলুর রস। আলুর রসে প্রচুর পরিমানে অ্যালকালাইন থাকায় গ্যাস্ট্রিক সমস্যা সমাধান করতে রোধ করে।

তাই আপনি একটি অথবা দুইটি আলু গ্রেড করে নিয়ে তার মধ্যে থেকে রস বের করে নিন। এবার আলুর রসের সাথে গরম পানি মিশিয়ে দিনে ৩ বার পান করুন। মনে রাখবেন, খাওয়ার কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে এটা পান করবেন। এভাবে ২ সপ্তাহ পান করুন করে দেখুন গ্যাসের সমস্যা কমতে থাকবে।

(১৩) জিরা

জিরা গ্যাস, পায়খানা, বমি ইত্যাদিতে বিশেষ কার্যকরী। আপনার যদি জ্বর হয় তাহলে ৫০ গ্রাম জিরা আকের গুড়ের সাথে ভালো করে মিশিয়ে ১০ গ্রাম করে বড়ি তৈরি করেন খাবেন। 

প্রত্যেক দিন ৩ বার এই বড়ি খাওয়ার ফলে ঘাম দিয়ে আপনার জ্বর সেরে যাবে। জিরা আমাদের শরীরের জন্য অনেক কার্যকরী বলে প্রমাণীত।

(১৪) দারুচিনি

দারুচিনি হজমের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এক গ্লাস পানিতে টেবিল চামচের আঁধা চামচ দারুচিনি গুঁড়ো করে মিশিয়ে পানি ফুটিয়ে প্রত্যেক দিন ২-৩ বার পান করলে গ্যাস রোধ করতে সাহায্য করবে।

(১৫) লবঙ্গ

আপনাদের যদি গ্যাস, বুক জ্বালা, বমিবমি ভাব হয় তাহলে ২-৩ টা লবঙ্গ মুখের ভিতর রেখে চুষলে ধীরে ধীরে কম হবে। এছাড়া লবঙ্গ মুখের দূরগন্ধ দূর করে।

উপরে বিষয় গুলো নিয়মিত মেনে চললে চিরতরে গ্যাস্ট্রিক দূর করা সম্ভব। এর সাথে খাবারের অনিয়ম ও তৈলাক্ত খাবরা যেমন, ভাজা পোড়া যুক্ত খাবার খাওয়া বন্ধ করতে হবে।

গ্যাস্ট্রিক দূর করার ঔষধ

গ্যাস্ট্রিক দূর করার অন্যতম একটি ঔষধের নাম রেনিটিডিন। আপনার যদি গেসের সমস্যা হয় তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই এই রেনিটিডিন খেতে পারবেন।

তবে, রেনিটিডিন ছাড়াও গ্যাসের আরো বিভিন্ন ধরনের ঔষধ বাজারে পাওয়া যায়। এই ঔষধ গুলো হলো – ইসুনিট ২০, এক্সিলক ২০, ওপি ২০, মাক্সপ্রো, এন্টারসিড, ইসোমিপ্রাজল বিপি, ফিনিক্স ২০, সার্জেল, রাবিপ্রাজল ইত্যাদি। 

উপরে গ্যাসের ঔষধ গুলো ছাড়াও আরো বেশি কিছু ঔষধ পাবেন। কিন্ত এই সব ঔষধ গুলো দীর্ঘ দিন সেবন করা ঠিক নয়। তাই গ্যাস্ট্রিক সমস্যা রোধ করার জন্য আপনাদের খাবারের প্রতি গুরুত্বশীল হতে হবে।

গ্যাস্ট্রিক এর লক্ষণ | গ্যাস্ট্রিক হলে কি কি সমস্যা হয়

বর্তমানে গ্যাস্ট্রেক এর সমস্যা আমাদের অধিকাংশ মানুষের মানুষের মধ্যে রয়েছে। নিয়ম মেনে খাবার না খাওয়া, অতিরিক্ত ঝাল যুক্ত খাবার খাওয়া, মদ্য পান, মানসিক চাপের কারণ এই গ্যাস্ট্রিক সৃষ্টি হয়।

আমরা ঘরে বাহিরে যে ফাস্টফুট খেয়ে থাকি সেটাই মূলত গ্যাসের সৃষ্টি করে। তাহলে চলুন নিচে থেকে জেনে আসি গ্যাসের লক্ষণ গুলো জেনে আসি। 

বুক জ্বালা করে

বুকে ও পেটে চাপ অনুভব হয়

বমিবমি ভাব হয় 

খাবার হজম হয় না

খিদে কম লাগে

উপরের সমস্যা গুলো যদি আপনার মধ্যে থাকে তাহলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন। তাছাড়া আমি উপর গ্যাস দূর করার কিছু ঘরোয়া উপায় বলেছি সেগুলো ফলো করুন।

কোন কোন খাবারে গ্যাস হয়?

  • অতিরিক্ত চা, কফি পান করলে
  • ভাজাভুজি ও মশলাযুক্ত খাবার বেশি খেলে
  • খাবারের অনিয়ম করে খাবার খেলে
  • অতিরিক্ত মদ্যপান করলে
  • রাতে ঘুুম না হলে বা রাত জাগলে
  • ধূমপান ও দূর চিন্তা করলে
  • অনেক ক্ষণ খালি পেটে থাকলে
  • রাতে খাবার খেয়ে সাথে সাথে ঘুমিয়ে পড়া
  • অতিরিক্ত মসুরের ডাউল খেলে
  • খালি পেটে ফল খেলে

গ্যাস্ট্রিক দূর করার ব্যায়াম

নিয়মিত ব্যায়াম আমাদের শরীর ফিট রাখতে সাহায্য করে। কিন্ত গ্যাস্ট্রিক সমস্যা সমাধানে ব্যায়াম যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা হয়তো আপনারা জানেন না।

তাই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রোধ করতে খাবার খাওয়া পরে নিয়মিত ভাবে হাঁটার অভ্যাস করুন। হাঁটা ছাড়াও দৌড় বা দড়ি লাফ গ্যাসের সমস্যা সমাধান করতে অনেক বেশি কার্যকরী।

শেষ কথা 

আজকের আর্টিকেলে আমরা জানলাম গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায় গুলোর সম্পর্কে। আপনারা যদি গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তি পেতে চান তাহলে উপরের নিয়ম মেনে চলুন।

গ্যাস্ট্রিক সমস্যা সম্পর্কে আর যদি কোনো প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকে তাহলে নিচের কমেন্টে জানাবেন এবং ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন।

Leave a Comment

Share via
Copy link
Powered by Social Snap