ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার উপায় 2023

ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার উপায়: আপনারা যারা ইন্টারনেটের মাধ্যমে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে চাচ্ছেন আজকের আর্টিকেলটি শুধু তাদের জন্য।

কেননা আজকে আমি আলোচনা করবো ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার সকল উপায় গুলো সম্পর্কে। এর সাথে আরো বলো ডিজিটাল মার্কেটিং কি এর সম্পর্কে।

Digital marketing হলো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম, সার্চ ইঞ্জিন এবং পিপিসি বিজ্ঞাপনের মতো একাধিক মার্কেটিং চ্যানেল ব্যবহার করে ইন্টারনেটের মাধ্যমে পণ্য প্রচার করার প্রক্রিয়া।

ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনি আপনার পণ্যের ক্রেতা সহজে খুজে পাবেন এবং তাদের সাথে সহজে যোগাযোগ করতে পারবেন।

বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং এর সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ গুলো হলো সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং, ইমেইল মার্কেটিং, পিপিসি মার্কেটিং এবং কনটেন্ট মার্কেটিং।

বড় বড় কোম্পানি গুলো তাদের পণ্যের ক্রেতা খুঁজতে ডিজিটাল মার্কেটিং এর উপর নির্ভরশীল। এখন আপনি যদি মনে করেন আপনার ব্যবসার জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং গুরুত্বপূর্ণ নয়, তাহলে আপনি ভুল করবেন।

আপনার প্রতিষ্ঠানের কোনো কাজ যদি ইমেইল অনলাইন বিজ্ঞাপন সংস্থার কাছে জমা দেন তাহলে আপনার ব্যবসা সংক্রিয় ভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং এর সাথে জড়িত।

এখন আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পণ্যের ক্রেতা বৃদ্ধি করার জন্য আপনি নিজে যদি একজন সফল ডিজিটাল মার্কেটার হতে চান তাহলে আপনাকে অনলাইন ভিত্তিক সকল কাজের বিষয় দক্ষতা অর্জন করতে হবে।

চলুন তার আগে আমরা নিচে থেকে জেনে আসি Digital marketing কি এর সম্পর্কে। তাহলে আপনার বুঝতে সুবিধা হবে।

ডিজিটাল মার্কেটিং কি? (What is Digital marketing)

ডিজিটাল মার্কেটিং কাকে বলে সহজ ভাষায় বলতে গেলে অনলাইনে ব্যবসার পণ্য প্রচার বা পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রচার করাকে বলা হয় ডিজিটাল মার্কেটিং।

আরো সহজ ভাষায় বলতে গেলে অনলাইনে পণ্য বা সার্ভিস প্রচার করার প্রক্রিয়াকে digital marketing বলে।

এই প্রচার হতে পারে সোশ্যাল মিডিয়ায় মাধ্যমে, হতে পারে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর মাধ্যমে, হতে পারে ইমেইল মার্কেটিং এর মাধ্যমে।

আবার ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রচার করতে পারেন। ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া বলতে টিভি, রেডিও ইত্যাদির মাধ্যমে প্রচার করাও ডিজিটাল মার্কেটিং বলা হয়।

ডিজিটাল ব্যবসার আইডিয়া 2022

এছাড়াও আপনি স্মার্টফোনের মাধ্যমে ইন্সট্যান্ট মেসেঞ্জিং, মোবাইল এপ্লিকেশন এর মাধ্যমে প্রচার করাকে ডিজিটাল মার্কেটিং বলা হয়।

মোট কথা আপনি যদি নিজের ব্যবসাকে আধুনিক যুগের তার তাল মিলিয়ে টিকিয়ে রাখতে চান তাহলে ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিকল্প নেই।

আশাকরি ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে আপনার কিছুটা ধারণা হয়েছে। এবার জানবো ডিজিটাল মার্কেটিং কিভাবে শিখতে হবে।

ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার উপায় 2023

ডিজিটাল মার্কেটিং তেমন কঠিক কোনো কাজ নয় যে আপনি শিখতে পারবেন না। আপনি যদি বিভিন্ন ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া গুলোর সাথে সংযুক্ত থাকেন এবং সেগুলোর ব্যবহার যদি জানেন তাহলে ডিজিটাল মার্কেটিং শেখা আপনার জন্য অনেক সহজ হয়ে যাবে।

সবাই শিখি এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আজকে আপনাদের ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার উপায় সম্পর্কে এমন কিছু পদ্ধতি তুলে ধরবো যেগুলো অনুসারণ করলে আপনি সহজে দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন।

ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার শুরু করার  প্রথামিক ৫টি ধাপ আপনাকে অনুসারণ করতে হবে এবং এই সম্পর্কে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। এই ধাপ গুলো হলো –

  • সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং
  • সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং
  • ইমেইল মার্কেটিং
  • কনটেন্ট মার্কেটিং
  • ডিজিটাল মার্কেটিং এনালাইসিস টুলস

তাহলে চলুন এই ধাপ গুলোর সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত জেনে আসি।

(১) সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং (Search engine marketing)

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন হলো ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। বিভিন্ন ধরনের সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন করে সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং পরিচালনা করতে হয়।

যেমন ধরুন আপনি গুগলে google ads বা বিং এ bing ads এর মাধ্যমে আপনার প্রতিষ্ঠানের পণ্য প্রচার করতে পারবেন।

SEO এর আর একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো গুগলে ওয়েবসাইট রেংক করে, যার ফলে ভিজিটর যখন নিদিষ্ট বিষয় নিয়ে গুগলে সার্চ করে তখন নিজের ওয়েবসাইট ভিজিটরদের সামনে চলে আসে।

ইন্টারনেট মার্কেটিং বা অনলাইন মার্কেটিং করার জন্য এসইও (SEO) খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এর মাধ্যমে আপনার প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে টার্গেট করা ভিজিটর নিয়ে আসে।

অনেকে আবার নিজের প্রতিষ্ঠানের প্রচার করার জন্য পেইড বিজ্ঞাপন প্রক্রিয়া করে থাকে। তবে, পেইড বিজ্ঞাপন গুগলে অল্প সময়ের জন্য রেংক করে।

আর আপনি যদি এসইও করে গুগলে রেংক করতে চান তাহলে যদিও একটু সময় নেই কিন্ত এটা দীর্ঘদিন পর্যন্ত গুগলে রেংক করে।

তাই প্রতিষ্ঠানের পণ্য দীর্ঘদিন গুগলে মার্কেটিং করার জন্য পেইড বিজ্ঞাপনের চেয়ে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর মাধ্যমে মার্কেটিং করলে সেটা দীর্ঘমেয়াদী হবে।

(২) সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং (Social media marketing)

সোশ্যাল মিডিয়া মাধ্যম ব্যবহার করে অনলাইনে মানুষের কাছে পণ্য বিক্রি বা প্রচার করাকে বলা হয় সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং।

বর্তমান বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ বিভিন্ন ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া গুলো ব্যবহার করেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুইটি সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম হলো ফেসবুক এবং টুইটার।

এই সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম গুলো আমাদের দৈন্দিন জীবনে এবং ডিজিটাল মার্কেটিং এর উপর ব্যাপক ভাবে প্রভার বিস্তার করেছে।

Digital marketing এর উদ্দেশ্য হলো অনলাইনে থাকা এই সম্ভব্য ক্রেতা গুলোকে আকৃষ্ট করা এবং তাদের কাছে পণ্য বিক্রি করা। তাই সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

বর্তমানে অধিকাংশ মানুষ সময় কাটানোর জন্য সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম ব্যবহার করে। আর এই সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং একে কেন্দ্র করে হয়ে থাকে।

কারণ এর মাধ্যমে আমরা অনলাইনে সক্রিয় থাকা মানুষের কাছে পণ্য প্রচার করতে পারি এবং তাদের সাথে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় সেবা পৌঁছে দিতে পারি।

আমি আগেই বলেছি বর্তমান বিশ্বে বিভিন্ন ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম রয়েছে। এর মধ্যে থেকে জনপ্রিয় কিছু প্লাটফর্ম বেঁচে নিয়ে আপনাকে মার্কেটিং করতে হবে।

(৩) ইমেইল মার্কেটিং (Email marketing)

অনেকে মনে করে ইমেইল মার্কেটিং মার্কেটিং প্রক্রিয়ার জন্য ততোটা কাজের না। যদি আপনি এমন ভেবে থাকেন তাহলে ভুল ভাবছেন।

কারণ, বিশ্বে এখনো প্রত্যেক দিন প্রায় বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের কাজ করা হয় এই ইমেইল মার্কেটিং এর মাধ্যমে। ক্রেতাদের আকৃষ্ট ও পণ্য সম্পর্কে সচেতন করার জন্য ইমেইল মার্কেটিং খুবই কার্যকারী।

এখন আপনি যদি মনে করেন আপনি নিজে একজন ইমেইল মার্কেটার হবেন তাহলে এই সম্পর্কে আপনার দক্ষতা ও বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে হবে।

আপনার যদি email marketing সম্পর্কে ভালো দক্ষতা না থাকে তাহলে আপনার ইমেইল গুলো ব্যবহারকারীর স্প্যাম ফোল্ডারে জমা পড়ে থাকবে।

ইমেইল মার্কেটিং করার জন্য আপনাকে কিছু টুলস এর ব্যবহার সম্পর্কে জানতে হবে।

(৪) কনটেন্ট মার্কেটিং (Content marketing)

ডিজিটাল মার্কেটি প্রচারের বিষয়বস্তু নির্ভর করে কনটেন্ট এর উপর ভিত্তি করে। কনটেন্ট মার্কেটিং দুই ধরনের হয়ে থাকে।

একটি হলো আর্টিকেল লিখে পণ্যের প্রচার করা এবং অপরটি হলো ভিডিও বা এনিমেশন তৈরি করে পণ্য প্রচার করা।

একজন কনটেন্ট মার্কেটার তার পণ্যের প্রচার করার জন্য আর্টিকেল লিখে প্রচার করে বা ভিডিও চিত্র তৈরি করে প্রচার করতে পারে।

আর্টিকেল লিখে পণ্যের প্রচার বা ভিডিও চিত্র তৈরি করে পণ্যের প্রচার করা দুইটাই কনটেন্ট মার্কেটিং এর অংশ।

আপনি যদি আর্টিকেল লিখে পণ্যের প্রচার করতে চান তাহলে আপনাকে লেখার উপর দক্ষতা অর্জন করতে হবে।

আর যদি ভিডিও চিত্র তৈরি করে পণ্যের প্রচার করতে চান তাহলে ভালো মানের ভিডিও চিত্র তৈরি করতে হবে।

(৫) ডিজিটাল মার্কেটিং এনালাইসিস টুলস

প্রত্যেক ডিজিটাল মার্কেটারদের অবশ্যই বিভিন্ন ধরনের মার্কেটিং এনালাইসিস টুলস এর উপর দক্ষতা থাকতে হবে।

একজন দক্ষ ডিজিটাল মার্কেটারের কাজ শুধু সোশ্যাল মিডিয়াতে পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রচার করা বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন করা নয়।

একজন সুদক্ষ মার্কেটারের কাজ হলো ক্রেতার অবস্থান, চাহিদা, আগ্রহ, পছন্দ বুঝে পণ্যের টার্গেট নির্ধারণ করা। আর এটা করা সম্ভব শুধুমাত্র এনালাইসিস টুল গুলোর মাধ্যমে।

এর জন্য আপনি Google analytics tool এবং google search console tool ব্যবহার করতে পারেন। এই টুল গুলোর মাধ্যমে আপনি সহজে ক্রেতাদের অবস্থান, চাহিদা, পছন্দ, আগ্রহ জানতে পারবেন।

ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে কতদিন লাগে?

ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিশাল বড় কর্মক্ষেত্র। তাই এর সম্পূর্ণ শিক্ষা অল্প সময়ে নেওয়া বেশ কঠিন। আমি নিজে একজন কনটেন্ট রাইটার।

আমি ছোট একটি ডিজিটাল মার্কেটিং কোম্পানিতে কনটেন্ট রাইটিং এবং এসইও (SEO) নিয়ে কাজ করি। আমার অভিজ্ঞতা থেকে যদি বলি,

আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং এর এসইও সেক্টরে কাজ করেন তাহলে সম্পূর্ণ এসইও নিজের আয়ত্বে আনতে বছরের পর বছর সময় দিতে হবে।

তবে, এসইও এর কনসেপ্ট গুলো আয়ত্বে আনতে আপনার ১ মাস থেকে ২ মাস সময় লাগবে। এর জন্য আপনাকে প্রতিদিন ২ ঘন্টা থেকে ৩ ঘন্টা সময় বাড়িতে অনুশীলন করতে হবে।

একই ভাবে আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং এর অন্যন্য সেক্টর গুলো শিখতে চান তাহলে এমনই সময় লাগতে পারে।

ডিজিটাল মার্কেটিং কেন শিখব?

মনে করুন আপনার একটি পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানের কথা আপনার এলাকার কিছু লোক জানে।

কিন্ত, যারা দূরের লোক তারা আপনার পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের কথা জানে না। এখন তাদের জানানোর জন্য আপনাকে অবশ্যই প্রচার করতে হবে।

এজন্য আপনাকে জনপ্রিয় কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদির মাধ্যমে প্রচার করে লোকজনকে জানাতে হবে। 

তাহলে এখান থেকে আপনার প্রতিষ্ঠানের পণ্যের ব্যাপারে কাঙ্ক্ষিত কাস্টমার পেয়ে যাবেন এবং আপনার ব্যবহার পরিধি বৃদ্ধি পাবে। এতে আপনার ব্যবসা দ্রুত বড় হতে সাহায্য করবে।

বর্তমানে যত বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে তারা সবাই ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে ব্যবসার পরিচালনা চালায়। এতে তারা দ্রুত সময়ে কাস্টমার পেয়েছে এবং মানুষের কাছে পরিচিত হয়েছে।

আশাকরি আপনি সহজে বুঝতে পারছেন ডিজিটাল মার্কেটিং কেন শিখবেন বা ডিজিটাল মার্কেটিং কেন করবেন

শেষ কথা

আজকে আমরা জানলাম ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার উপায় এবং কেন Digital marketing শিখবেন সেই সম্পর্কে।

ডিজিটাল মার্কেটিং A to Z সম্পর্কে যদি আরো কোনো বিষয় প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকে তাহলে নিচের কমেন্টে লিখে জানাবেন। আর ভালো লাগলে বন্ধুদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করবেন।

Leave a Comment

Share via
Copy link
Powered by Social Snap